OrdinaryITPostAd

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনকথা

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১-১৯৪১) বাঙালি সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি, গল্পকার, গীতিকার, নাট্যকার, চিত্রকর এবং দার্শনিক। তিনি ভারতবর্ষের প্রথম নোবেল পুরস্কার বিজয়ী (১৯১৩), এবং তিনি তার "গীতাঞ্জলি" কাব্যগ্রন্থের জন্য সাহিত্য বিভাগে এই পুরস্কার লাভ করেন।

জীবনী

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম ১৮৬১ সালের ৭ মে কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে। তিনি ছিলেন মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং সারদা দেবীর ত্রয়োদশ সন্তান। ঠাকুর পরিবার ছিল বাংলা রেনেসাঁর অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু এবং রবীন্দ্রনাথ এই সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে বেড়ে উঠেন।

শিক্ষা ও সাহিত্য জীবন

রবীন্দ্রনাথ কলকাতার স্কুলে নিয়মিত পড়াশোনা করতে পারেননি। তিনি বাড়িতেই তার প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। ১৭ বছর বয়সে তিনি ইংল্যান্ড যান, সেখানে লন্ডনের ইউনিভার্সিটি কলেজে আইন পড়ার উদ্দেশ্যে ভর্তি হন। তবে তিনি আইন পড়া শেষ না করে ভারত ফিরে আসেন এবং সাহিত্য চর্চায় মনোনিবেশ করেন।

তার সাহিত্য জীবনের শুরুটা হয় কবিতা লেখার মাধ্যমে। ১৮৭৭ সালে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ "কবিকাহিনী" প্রকাশিত হয়। তিনি বাংলা সাহিত্যকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যান এবং তার সৃষ্টিশীলতা বাংলা সাহিত্যের প্রায় প্রতিটি শাখাকে স্পর্শ করেছে—কবিতা, গান, নাটক, ছোটগল্প, উপন্যাস ইত্যাদি।

সাহিত্যকর্ম

রবীন্দ্রনাথের লেখায় মানুষের জীবন, প্রকৃতি, প্রেম, সামাজিক সমস্যা, দার্শনিক চিন্তাধারা ইত্যাদি প্রভূত বিষয় প্রকাশ পায়। তার বিখ্যাত কবিতা সংগ্রহের মধ্যে "গীতাঞ্জলি", "সোনার তরী", "গীতিমাল্য", "কণিকা", "বলাকা" ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

গল্পে তিনি আধুনিক বাঙালি জীবনের বিভিন্ন দিক ফুটিয়ে তুলেছেন। তার রচিত উপন্যাসগুলির মধ্যে "গোরা", "ঘরে বাইরে", "চতুরঙ্গ", "শেষের কবিতা" উল্লেখযোগ্য। তিনি বাংলা নাটকের ক্ষেত্রেও ব্যাপক অবদান রেখেছেন, "রক্তকরবী", "ডাকঘর", "রাজা" প্রভৃতি তার বিখ্যাত নাটক।

সংগীত

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সংগীত প্রতিভাও ছিল অসাধারণ। তার রচিত ও সুরারোপিত গানগুলি 'রবীন্দ্রসঙ্গীত' নামে পরিচিত এবং বাংলা সংস্কৃতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তার দুটি গান—ভারতের জাতীয় সঙ্গীত "জন গণ মন" এবং বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত "আমার সোনার বাংলা"—জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে গৃহীত হয়েছে।

মৃত্যুবরণ

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯৪১ সালের ৭ আগস্ট কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন। তিনি বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে এমন একটি স্থান অধিকার করে আছেন যা চিরকাল অমলিন থাকবে। তার কর্ম ও সৃষ্টিকর্মগুলি আজও বিশ্বের মানুষকে অনুপ্রাণিত করে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩