কম্পিউটারের প্রকারভেদ
গঠন ও ক্রিয়া নীতির উপর ভিত্তি করে কম্পিউটার কে ভাগ করা যায় তিন ভাগে। যথা:
১। অ্যানালগ কম্পিউটার
২। ডিজিটাল কম্পিউটার
৩। হাইব্রিড কম্পিউটার
অ্যানালগ কম্পিউটার:
● অ্যানালগ কথাটা এসেছে Analogous শব্দ থেকে যার অভিধানিক অর্থ হলো সদৃশ।
● অ্যানালগ কম্পিউটারে বর্ণ এবং অংকের বদলে ক্রমাগত পরিবর্তনশীল সংকেত বা অ্যানালগ সংকেত ব্যবহার করা হয়।
● অ্যানালগ সংকেতের মূল বশিষ্ট্য হচ্ছে পর্যায়ক্রমিক ভাবে ওঠা নামা করা।
● অ্যানালগ কম্পিউটার প্রক্রিয়াজাত ফলাফলকে প্রকাশ করে সাধারণত প্রদর্শনের কাঁটার সাহায্যে।
● প্লটারের সাহায্যে অংকিত গ্রাফের আকারে ও ছবি এঁকে।
● অ্যানালগ কম্পিউটারে পরিমাপ করে ফলাফল বের করা হয় বলে এর সক্ষমতা কম, মোটামুটি ০.১%।
● অ্যানালগ কম্পিউটারের উদাহরণ: মাটরগাড়ির স্পিডোমিটার, স্লাইড রুল, অপারেশনাল অ্যামপ্লিফায়ার ইত্যাদি।
ডিজিটাল কম্পিউটার :
● ডিজিটাল কম্পিউটারের ডিজিটাল কথাটি Digit শব্দ হতে উৎপন্ন হয়েছে যার অর্থ অংক।
● প্রক্রিয়াকরণের ফলাফল সরাসরি মনিটরে বা অন্য কোনো আউটপুট ডিভাইসে প্রদর্শিত হয় ডিজিটাল কম্পিউটারে।
● ডিজিটাল কম্পিউটার হলো গণিতের নীতির উপর নীতির উপর ভিত্তি করে পরিচালিত একটি হিসাব যন্ত্র।
● ডিজিটাল কম্পিউটারে ডিজিটাল সংকেত বা বিদ্যুৎ প্রবাহ চালু বা বন্ধ করে হিসাবকার্য করা হয়ে থাকে অর্থাৎ এটি ‘০’ ‘১’ দিয়ে সব ধরণের কাজের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে।
● ডিজিটাল কম্পিউটারের কাজের সক্ষমতা অনেক বেশি।
● সাধারণত আমরা যেসব কম্পিউটার ব্যবহার করি তার বেশিরভাগই ডিজিটাল কম্পিউটার।
● প্রথম Digital Computer এর নাম Mark-1
আরও পড়ুনঃ কম্পিউটারের ইতিহাস
আকার-আয়তন, কাজ করার ক্ষমতা, স্মৃতি ও সুযোগ ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে ডিজিটাল কম্পিউটারকে ভাগ করা হয়েছে চার ভাগে। যথা:
ক. সুপার কম্পিউটার ,
খ. মেইনফ্রেম কম্পিউটার ,
গ মিনি কম্পিউটার ,
ঘ. মাইক্রো কম্পিউটার
✿ সুপার কম্পিউটার :
● ক্ষমতা-আকৃতি ইত্যাদির ভিত্তিতে অতি বড় কম্পিউটারকে বলা হয় সুপার কম্পিউটার।
● সবচেয়ে দ্রতগতির কম্পিউটার হলো সুপার কম্পিউটার।
● প্রতি সেকেন্ডে বিলিয়ন হিসাব করতে পারে সুপার কম্পিউটার।
● সুপার কম্পিউটার মেইনফ্রেম, মিনি ও মাইক্রো কম্পিউটারের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী।
● সুপার কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য হলো ক্ষমতা বেশি, আকার-আকৃতিতে অনেক বড়, অত্যন্ত শক্তিশালী, অত্যন্ত দ্রুতগতিতে কাজ করতে পারে ইত্যাদি।
● সুপার কম্পিউটার ব্যবহার করা হয় সূক্ষ্ম বৈজ্ঞানিক গবেষণা, বিপুল পরিমাণ তথ্য বিশ্লেষণ, নভোযান, জঙ্গিবিমান, .ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ন্ত্রণ, মহাকাশ গবেষণা, পারমাণবিক চুল্লী ইত্যাদি
ক্ষেত্রে।
● বর্তমানে বিশ্বের দ্রুততম সুপার কম্পিউটার হলো তিয়ানহে ২ (চীন)
● ‘পরম’ নামে সুপার কম্পিউটার তৈরি করে যে দেশ ভারত।
● বাংলাদেশের একমাত্র সুপার কম্পিউটারটি আছে – বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল ল্যাবে।
● বাংলাদেশের সুপার কম্পিউটারটি হলো IBM RS/6000 SP মডেলের।
✿ মেইনফ্রেম কম্পিউটার :
● মেইনফ্রেম কম্পিউটার হলো এমন একটি বড় কম্পিউটার যার সঙ্গে অনেকগুলো কম্পিউটার বা ডাম্ব টার্মিনাল যুক্ত করে এক সঙ্গে অনেক মানুষ কাজ করতে পারে।
● মেইনফ্রেম কম্পিউটার সুপার কম্পিউটারের চেয়ে আকারে ছোট।
● ১৯৬৪ সালে বাংলাদেশে স্থাপিত প্রথম কম্পিউটারটি ছিল IBM-1620 মডেলের যা একটি মেইনফ্রেম কম্পিউটার।
● মেইনফ্রেম কম্পিউটার ব্যবহৃত হয় বড় বড় প্রতিষ্ঠান কোম্পানি, ফ্যাক্টরি ইত্যাদি।
✿ মিনি কম্পিউটার :
● মেইনফ্রেম কম্পিউটারের চেয়ে ছোট আকারের কিন্তুু পার্সোনাল বা মাইক্রো কম্পিউটারের চেয়ে বড় আকারের কম্পিউটারকে মিনি কম্পিউটার বলে ।
● মিনি কম্পিউটারের জনক কেনেথ এইচ ওলসেন।● মিনি কম্পিউটারকে বলা হয় মধ্যম সারির কম্পিউটার।
● প্রথম মিনি কম্পিউটারের নাম পিডিপি-১।
✿ মাইক্রো কম্পিউটার:
● সুপার মেইনফেম ও মিনি কম্পিউটারের চেয়ে আকার ছোট কম্পিউটারকে বলে মাইক্রো কম্পিউটার।
● মাইক্রো কম্পিউটারের অপর নাম পার্সোনাল কম্পিউটার।
মাইক্রো বা পার্সোনাল কম্পিউটার কয়েক শ্রেণির হতে পারে। যথা:
ক ডেক্সটপ
খ. ল্যাপটপ
গ. নোটবুক
ঘ. ট্যাবলেট
ঙ. হ্যালহেড বা পামটপ
● প্রথম পার্সোনাল কম্পিউটার তৈরি করেন মাইক্রোইনস্ট্রমেন্টেশন এন্ড টেলিমেট্রি সিস্টেমস
● ডেক্স বা টেবিলে স্থাপন করে যে মাইক্রো কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়, তাকে বলে ডেক্সটপ কম্পিউটার।
● Lap শব্দের অর্থ কোল। কোলের উপর স্থাপন করে কাজ করা যায়, এমন আকারের কম্পিউটারকে বলা হয় ল্যাপটপ।
● ১৯৮১ সালে ল্যাপটপ কম্পিউটার বাজারে আনে এপসন কোম্পানি।
● ল্যাপটপ কম্পিউটারের সুবিধা হলো বহনযোগ্যতা, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী, মাউসের পরিবর্তে টাচপ্যাড।
● দোয়েল ল্যাপটপ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান হলো টেশিস।
● টেশিস এর পূর্ণরপ হলো টেলিফোন শিল্প সংস্থা লিমিটেড।
● নোটবুক পূর্ণ আকারের চেয়ে অপেক্ষাকৃত ছোট কী বোর্ড এবং ফ্লিপ আপ মনিটর সম্বলিত এক প্রকার মোবাইল কম্পিউটার।
● নোটবুকের আকার ল্যাপটপের চেয়ে ছোট কিন্তু. পামটপের চেয়ে বড়।
● হ্যান্ডহেল্ড বা পামটপ হলো হাতের তালুতে রেখে কাজ করার জন্য এমন ছোট আকারের কম্পিউটার।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url